পিরিয়ড - Wohad Mahmud (পর্ব ৪)


পিরিয়ড #পর্ব-৪

আর সেখানে কোনো অঘটন সৃষ্টি করে‌। আকাশ একা ছিল আর ওই ছেলেগুলো অনেক ছিল।

আজ সারাদিন পার হয়ে রাত হয়ে গেল। রাত হয়ে গিয়েছে। সকলে খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়েছে।

রাত আনুমানিক দশটা বাজে। হঠাৎ করেই রাতে কলিং বেল বেজে ওঠে। সানজিদার মা তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলেই দেখে যে, আকাশ দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। চুলগুলো কেমন এলোমেলো। মাথ ফেটে রক্ত বাহির হচ্ছে।

সানজিদার মা কী করবে বুঝতে পারছে না। ছেলের এমন অবস্থা দেখে বাক রুদ্ধ হয়ে গেছে।

আকাশ রুমের মধ্যে ঢুকতেই অজ্ঞান হয়ে নিচে পড়ে যায়। এটা দেখে সানজিদার মা চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় নিচে।

সানজিদা, সানজিদার বাবা আর বড় ভাই ছুটে আসে সানজিদার মায়ের চিৎকার শুনে।


এসে বলে মা কী হয়েছে চিৎকার কেন করলে? খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখেছো না-কি?

এমন পরিস্থিতি দেখে সানজিদার মা বুঝতে পারে এটা স্বপ্ন ছিল বাস্তব না। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে, হ্যাঁ আমি খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছি।

কী স্বপ্ন?

সবাই একসাথে বসে ছিলাম হঠাৎ কলিং বেলের শব্দে গিয়ে দেখি দরজার পাশে আকাশ আর মাথা ফেটে রক্ত বাহির হচ্ছে। চুলগুলো কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। ঘরের মধ্যে ঢুকতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।

সানজিদা বলল, চিন্তা করো না মা। আকাশের কিছু হবে না। ঘুমিয়ে যাও। বেশি চিন্তা করেছো আর মনের মধ্যে উল্টা পাল্টা খেয়াল আসলে এমন স্বপ্ন আসে।


সবাই ঘুমিয়ে যায়। সকালে উঠে সবাই মন খারাপ করে বসে আছে।

স্বপ্নের ন্যায় হঠাৎ কলিং বেলের শব্দ শুনতে পায়। সানজিদার মা আরো ভয় পেয়ে যায়। আস্তে আস্তে দরজার কাছে যায় আর মনে মনে দোয়া করে, ভালো কিছু হয় যেন। স্বপ্নের মতো খারাপ কিছু হয় না যেন।

দরজা খুলে দেখে আকাশ না, আকাশের চাচাতো ভাই। অনেক হাঁপাচ্ছে।

সানজিদার মা বলে বলে কিছু হয়েছে কী, এতো হাঁপাচ্ছিস কেন? কী হয়েছে?

চাচি আকাশ হাসপাতালে ভর্তি তাড়াতাড়ি চলেন।

তুই কীভাবে জানতে পারলি আকাশ কোথায়।

অপরিচিত এক নাম্বার আমাকে ফোন দিয়েছিল আকাশ। আর আপনাদের জরুরি জানাতে বলছে।

সবাই তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে গিয়ে দেখে সত্যি সত্যি আকাশ হাসপাতালে ভর্তি। মাথায় আঘাত পেয়েছে।

আকাশের বাবা ডাক্তারের সাথে বলে। ডাক্তার বলে মাথায় বেশ আঘাত পেয়েছে। তাকে মানুষিক চাপ যেন, না দেওয়া হয়। তবে বেশি চিন্তার কিছু নেই। আর আজকেই বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন আকাশকে।


তারপর আকাশকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।

আকাশের বাবা বলে তোর এই অবস্থা কেমন করে হয়েছে বাবা?

আকাশ একবার বোনের দিকে তাকাচ্ছে আর একবার বাবার দিকে তাকাচ্ছে। কী বলবে বুঝতে পারছে না। সত্যি টা বাবাকে জানালে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। আর সানজিদা কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছে কী হয়েছে।

আর কোনো উপায় না পেয়ে বলে আমি এক্সিডেন্ট করেছিলাম বাবা।

তোকে হাসপাতালে নিয়েছিল কে? আর কীভাবে হয়েছে এতবড় এক্সিডেন্ট?

জানি না বাবা, কে নিয়েছিল। আমি তখন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম। আমি রাস্তা দিয়ে হাসছিলাম তখন পিছন থেকে এসে অটোতে ধাক্কা লাগে।

তোর মোবাইল কোথায়? কেউ যদি তোর মোবাইল দিয়ে কারোর ফোনে করে বলে দিত তাহলে আমরা কিছুটা শান্তি পেতাম। কাল থেকে আমাদের উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছে।

আমার মোবাইল কোথায় জানি না। মনে হয় এক্সিডেন্টের সময় হারিয়ে গেছে।


সানজিদা তখন বলল, এতো আর প্রশ্ন করো না বাবা। এমনিতেই মাথায় আঘাত পেয়েছে। বেশি কথা বললে সমস্যা হবে। একটু রেস্ট নিতে দাও।

তারপর সবাই চলে যায়। আর আকাশ রেস্ট নেই।

কিছুক্ষণ পরে সানজিদা আবার আকাশের রুমের গিয়ে বলে সত্যি করে বলতো তোর এই অবস্থা কীভাবে হয়েছে?

আকাশ বলল আমি বাবার সাথে যেটা বললাম ওটাই সত্যি আপু।

সানজিদা কিছুটা ধমক দিয়ে বলল, আমাকে কী তোর পাগল মনে হয়। সত্যি কথা বলবি না-কি সেদিনের ঘটনা বাবাকে বলে দিব।

তুই তাহলে বাবাকে এখনও কিছু বলিস নাই?

না এখনও কিছু বলি নাই‌। যদি বাবা জানতো তাহলে তোর অবস্থা এর থেকে খারাপ হয়ে যেত। এবার সত্যি করে বল কী হয়েছিল?

আকাশ বলল, বলতে পারি তবে প্রমিজ করতে হবে তোকে, বাবার কাছে বলবি না আমার কি হয়েছিল। বাবা যদি এটা জেনে যায় তাহলে সবটা জেনে যাবে। আমি তোর সাথে কী করেছি সেটাও জেনে যাবে। আর বাবা সবটা জানাতে পারলে কী করবে আমি নিজেও জানি না।

তোর কী মনে হয় আমি এতটাই বোকা। হাজার হলেও তুই আমার ভাই। যদি বলার হতো তাহলে আমি আগেই সবকিছু বলে দিতাম।

আকাশ তখন বলল, তোর সাথে কালকে ওমন করার পরে ওই ছেলেগুলোর সাথে ঝামেলা করেছিলাম। তারপর ওরা বিভিন্ন ভাবে আমাকে অপমান করে।


আর আমি ভেবেছিলাম তুই হয়তো কালকের কথা বাবার সাথে বলে দিবি। আর বাবা জানলে আমাকে অনেক মারবে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিই আর বাসায় যাব না। যেখানে ইচ্ছা চলে যাব। আমি হাটা শুরু করলাম। হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে যায়। একটা এলাকায় যাওয়ার পরে দেখি দুটা ছেলেদের কয়েকটা মেয়ে দেখে বাজে কথা বলছে। আমি ওদের প্রতিবাদ করেছিলাম। কথায় কথায় এক সময় বিষয়টা মারামারি তে চলে যায় আর পিছন থেকে একজন আমাকে বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে আমি সেখানেই অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। পরে দেখি আমি হাসপাতালে।

জ্ঞান ফিরে আমি তোমাদের কাছে ফোন না দিয়ে একজন নার্সের ফোন নিয়ে গফুরকে( চাচাতো ভাই) ফোন দিয়ে তোমাদের আসতে বলি।###

আকাশের কথা শেষ হতে না হতেই রুমের মধ্যে প্রবেশ করে আকাশের বাবা।


চলবে,,,,


Comments

  1. সত্যিই অসাধারণ হয়ছে



    আমাদের দুইটি সাইটে আপনি,
    Comment BackLink করতে চাইলে
    করতে পারেন !
    আমার সাইটের নাম

    www.webangali.com


    www.bd-express.top

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

মুখোশের আড়ালে - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-১৯)

রঙ চা - মাহফুজা মনিরা (সকল পর্ব ১-২৬)

ধোঁয়াশা - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২১)