বিপরীত প্রতিক্রিয়া - আহম্মেদ আব্দুল্লাহ

সকালে ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই আম্মু গালে কষিয়ে চড় মেরে দিলো।
-মারলে কেনো আম্মু?
-মারবো না তো কি করবো তোর মতো ছেলেরা সকাল ৮ টায় কেনো ঘুম থেকে উঠবে।তুই বড় ঘরের সন্তান ১২ টার আগে একদমই ঘুম থেকে উঠা চলবে না।ঠিক আছে আম্মু আর এমন হবে না।
সেটা না হয় বুঝলাম করবি না রাতে এতো তাড়াতাড়ি ঘুমানোও চলবে না।পাশের বাসার ভাবির ছেলে পাবজির এক নাম্বারে খেলোয়াড় বাংলাদেশে।আর তুই এখনো ২০ লেভেলেই ফেরতে পারিস নাই।তোর ভবিষ্যতে অন্ধকার।শুন সারারাত জেগে পাবজি খেলে যদি এক নাম্বার হতে না পারিস তাহলে বাড়ি থেকে বিদায় করে দিবো।
সেদিন ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলাম আগুন আগুন বলে,আমার বই খাতা সব পুড়িয়ে দিচ্ছে সবাই মিলে।জিজ্ঞেস করলাম আম্মু, আব্বু এমন করছো কেনো?তোকে না কত বার বললাম যে পড়াশোনা করতে হবে না।পাশের বাসার ভাবির ছেলে মাস্তানি করে বেড়ায়।তোকে ও করতে হবে টপ ওয়ানের মাস্তান হতে হবে।প্রয়োজনে দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিবো,সেখানে গিয়ে মাস্তানি স্কুলে পড়ে সাটিফিকেট অর্জন করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবি।
সেদিন আম্মুর কাছে দুধ খেতে চাইলাম রাত জেগে গল্প লিখতে, লিখতে মস্তিষ্ক বিগড়ে যাচ্ছে,দুধ খেলে হয়তো একটু ভালো লাগবে।আম্মু কাঁদো কাঁদো গলায় আব্বুকে বললেন ওগো শুনছো তোমার ছেলে দুধ খেতে চায়।
আব্বুঃতুমি কি আমার ছেলেটাকে দুধ দিয়ে দিয়েছো?
আম্মুঃনা গো না তুমি বললে দিবো।
আব্বুঃএকদমই দিবে না।
এখন কি দুধ খাওয়ার বয়স আছে নাকি, আমি বাজারে যাচ্ছি এক বোতল মদ নিয়ে আসি।
আম্মুঃহ্যা তাই করো।
আব্বু মদের বোতলটা হাতে দিয়ে বললো নে বাপ খাওয়া শুরু কর।আমি একটু একটু করে গ্লাসে করে মদ খাচ্ছি,আব্বু আর পারবো না জঘন্য খেতে।আব্বু ধপাস করে গালে চড় বসিয়ে দিলেন।আমার বন্ধুর ছেলে প্রতিদিন ৫ বোতল করে মদ খায়। তোকেও পারতে হবে, যদি না পারিস তাহলে তাদের কাছে আমি মুখ দেখাবো কি করে।
লুকিয়ে কলেজে যেতে হয় যদি আম্মু আব্বু জানে আমার হাড্ডি,মাংস আস্ত রাখবে না
সেদিন লুকিয়ে লুকিয়ে কলেজ থেকে আসতেই আব্বু জিজ্ঞেস করলে কোথায় গিয়েছিলো?
আমিঃআব্বু এই তো সামনেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।
ঠিক সেই সময় কলেজের আইডি কার্ড টা পড়ে গেলো। আব্বু চিৎকার, ছ্যাচামেছি করে আম্মুকে ডাক দিয়ে বললেন এই ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করাতে পারলাম না.সেদিন ইচ্ছে মতো ঝাটাপিটা করে বাড়ি থেকে বেরোই করে দিলো।
২ বছর পর নিজ বাড়িতে পা রাখলাম। বাম হাতে একটা মদের বোতল,ডান হাতে ছয় রাউন্ডের পিছতল।হেলে ধুলে মদের বোতল এক টানে শেষ করে বাড়ির দরজার মধ্যে মদের বোতলটা ছুঁড়ে মারলাম।
কই রে বাপ বেড়িয়ে আয় চিৎকারে শব্দে আব্বা বেড়িয়ে আসলো।আমাকে দেখেই খুশিতে জড়িয়ে ধরলো।ধপাস করে বাপের গালে চড় লাগিয়ে দিলাম।আব্বা খুশিতে আম্মুকে ডেকে বলছে দেখো আব্দুল্লাহ র মা তোমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ফিরে এসেছে।

Comments

Popular posts from this blog

মুখোশের আড়ালে - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-১৯)

ধোঁয়াশা - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২১)

কলঙ্কের ফুল - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২৯)