তুমি আছো বলে - নৌশিন আহমেদ রোদেলা (পর্ব ৭)


ঠাসসসসসসসসসস্,,,,,,,তোমার কোনো ধারনা আছে,, আমি কতটা টেনশনে ছিলাম??সারাটা দিন খাওয়ার কথাটা পর্যন্ত একবার মনে হয় নি,,,,শুধুমাত্র তোমার টেনশনে।।।শহরের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তোমাকে খুজি নি,,,,,আর তুমি??এখানে অন্য আরেক ছেলের হাত ধরে ফষ্টিনষ্টি করছো??(চিৎকার করে)হাউ ডিয়ার ইউ??? তোর সাহস কি করে হলো অন্য ছেলের হাত ধরার??(বলেই নিশির দুই গাল শক্ত করে চেপে ধরলো,,,নিশি ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠলো)কেটে রেখে দিবো,,,তোকে বলি নি আমি??যে তুই শুধু আমার,,,বল বলি নি??

বলেই নিশিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে পাশের টেবিলে জোড়ে লাথি মারলো,,,,,নিশি ভয়ে কেঁপে উঠলো,,,নিলয়ের এই ভয়ংকর রূপ নিশি কখনো দেখে নি,,,এর আগেও রাগ করেছে,,,কিন্তু এতোটা ভয়ংকর কখনো না।।নিলয় নিশিকে টেনে আবার দাঁড় করালো,,,নিশির গলা চেপে ধরে চিৎকার করে বলে উঠলো,,,

এতোই যদি অন্য ছেলেকে ভালো লাগে,,,কাল কেনো বলেছিলি ভালোবাসিস??বল কেনো বলেছিলি??খুন করে ফেলবো তোকে আমি,,, খুন করে ফেলবো।।।আগে তোকে মারবো,,তারপর নিজে মরবো।।।বুঝতে পারছিস তুইইই???

আরেহ,,আপনি নিশুকে মারছেন কেনো,,আর এমন মিসবিহেভই বা কেনো করছেন??হাউ ডিয়ার ইউ,,ছাড়ুন ওকে,,,নয়তো আমি পুলিশকে জানাতে বাধ্য হবো,,,

নিলয়ের রাগ এবার আরো বেড়ে গেলো,,,,ওকে পুলিশ দেখাচ্ছে???একে তো নিশির হাত ধরার দুঃসাহস দেখিয়েছে,,,আবার ওদের মধ্যে কথা বলছে ,,,হাউ ডিয়ার হিম??নিলয়ের তো ইচ্ছা করছে,,একে এখানেই পুঁতে ফেলতে।।।নিশি বুঝতে পারছে,,নিলয় এখন আর নিজের মধ্যে নেই,,,ভালো মানুষগুলো খারাপ হলে,,,তারা খুবই ভয়ংঙ্কর পর্যায়ে চলে যায়,,,নিলয়ের অবস্থায় তাই,,,সব সময় শান্ত থাকা নিলয়,, শুধু নিশির বিষয়গুলোতেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করে,,,,আর এই ভয়াবহতা যে কতটা ভয়ানক হতে পারে,,,সহজেই যে করো মৃত্যুকেও ডেকে আনতে পারে,,তা নিশি নিলয়ের চোখ দেখাই বুঝতে পারছে।।নিরার বিয়ের দিনও নিলয় রেগে গিয়েছিলো,,,তার কারণ নিতান্ত তুচ্ছ না হলেও,,ওভাবে রেগে যাওয়ার মতো আহামরি কিছু ছিলো না,,তবু নিলয়ের চোখে ভয়ঙ্কর রাগ ফুটে উঠেছিলো।।নিশির শাড়ির ফাঁক দিয়ে ভুলবশত বেরিয়ে পড়া কোমরে স্পর্শ করার চেষ্টার মতো দুঃসাহস করেছিলো কেউ।।কিন্তু ছুতে পারেনি তার আগেই ছেলেটির হাত গুড়িয়ে দিয়েছিলো নিলয়।।আর আজ তো ফাহিনকে হাত ধরতে দেখেছে,,,ফাহিনের কি অবস্থা করবে নিলয় ভাবতেই কেঁপে উঠলো নিশি।।।হ্যা,,নিশি ফাহিনের সাথে ছিলো,,, ওর আর নিলয়ের ব্যাপারে সব বলতেই ফাহিনকে ডেকেছিলো নিশি,,,তাড়াহুড়োয় ফোনটা বাসায়ই ফেলে এসেছে।। যার জন্য নিলয়ের ফোন,, মেসেজ কোনো কিছুতেই রেসপন্স করতে পারে নি সে।।।নিশি ভেবেছিলো খুব ইজিলি ফাহিনকে সবকিছু বলে মেনেজ করে নিবে ব্যাপারটা,,,কিন্তু ফাহিন নিশিকে বলার সুযোগই দেয় নি,,,আর নিশি কিভাবে যে কথাটা শুরু করবে তাই বুঝতে পাচ্ছিলো না,,,তাই চুপচাপ সুযোগ খুজছিল।।সারাদিন ফাহিনের বকবক শুনে নিশি ডিসাইড করেছিলো রেস্টুরেন্টে বসে খেতে খেতেই বলে দিবে কথাটা।।।কিন্তু ওইযে বলে "অভাগা যেদিকে তাকায়,, সাগর শুকিয়ে যায়"।। নিশি কথাটা বলতেই যাবে তখনই,,নিশির হাতে নিলয়ের দেওয়া আংটিটা চোখে পড়ে ফাহিনের আর ওটা দেখার জন্যই হাতটা ধরে ফাহিন আর তখনি কোথা থেকে নিলয় এসে নিশির গালে চড় বসিয়ে দেয়।।নিশি ভেবে পাচ্ছে না কি করবে,,,নিলয়কে থামাতে হবে নয়তো খারাপ কিছু হয়ে যাবে নির্ঘাত।।নিলয় ফাহিনের দিকে রক্তলাল চোখে এগিয়ে যাচ্ছিলো,,,ঠিক তখনি নিশি নিলয়ের হাত জড়িয়ে ধরে ফাহিনকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,,,

ফাহিন প্লিজ,,,এটা আমার আর আমার হাজবেন্ডের ব্যক্তিগত ব্যাপার,,তুমি এর মধ্যে কথা বলো না।।

নিশির কথায় ফাহিন চরম অবাক হলো,,, নিলয়ের অবাক হওয়ার মাত্রা ফাহিনকেও ছাড়িয়ে গেলো।।।নিশি এসব কি বলছে??নিলয় নিশির স্বামী??নিলয় নিজের রাগ ভুলে অবাক বিস্ময়ে নিশির দিকে তাকিয়ে রইলো,,,

কি,,,উনি তোমার হাজবেন্ড?তুমি আমার সাথে মজা করছো নিশু???(অবাক হয়ে)

মজা করার কি আছে,,,আম সিরিয়াস,,,মিষ্টার চৌধুরী আমার হাজবেন্ড,,,আমরা লুকিয়ে বিয়ে করেছি,,,আর এই কথাটা জানাতেই তোমাকে এখানে আসতে বলা।।তোমাকে না বললে,, তোমাকে ঠকানো হতো,,,আম সো সরি ফর দেট।।।অন্যের বিবাহিত স্ত্রীকে নিশ্চয় বিয়ে করতে চাইবে না তুমি??

তাহলে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হওয়ার কারন কি??কেন রাজি হয়েছিলে??

বাবার কথা ভেবে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম,,, কিন্তু পরে বুঝতে পারি মিষ্টার চৌধুরীকে ছাড়া আমার চলবে না,,,তাই উনাকে লুকিয়ে বিয়ে করে নিই,,,আমি সরি,,আমি জানি আমার কাজটা ঠিক হয়নি,,কিন্তু আই ওয়াজ হেল্পলেস।।।(বলেই মাথা নিচু করে ফেললো)

নিলয় কিছুই বুঝতে পারছে না সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তবে এটুকু বুঝতে পারছে,,সে নিশিকে ভুল বুঝেছে।।আর উইথআউট রিজন ওর গায়ে হাত তুলেছে,,,ছি,, নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছে এখন,,ফাহিন কিচ্ছু বললো না,, চুপচাপ চলে গেলো।।।নিশি বুঝতে পারছে না ফাহিন ব্যাপারটা কিভাবে নিলো?পজিটিব অর নেগেটিব??বাবাকে কিছু বলবে না,তো??টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে নিশির,,তারউপর গলায় ব্যাথা করছে প্রচুর,,,,

নিশু,,,,,(করুন কন্ঠে)

নিশি নিলয়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে গেলো,,,কেনো শুনবে সে নিলয়ের কথা??নিলয় কি একটাবারও নিশির কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করেছে??তাহলে নিশি কেনো শুনবে??মোটেও শুনবে না সে,,নিশির অভিমান হয়েছে,,,তার থেকেও বেশি কষ্ট পেয়েছে,,,,ভরা রেস্টুরেন্টে নিশি উপভোগের বস্তুতে পরিনত হয়েছে আজ,,,তাও শুধু নিলয়ের জন্য,,,,,নিশির চোখ থেকে টুপটাপ জল গড়িয়ে পড়ছে,,,,

নিশু,,,এই নিশু,,,নিশশশশু

..............................

একটু শোনো প্লিজ,,,আমি সরি,,,আমি জানি আমি দোষ করেছি,,আমাকে মারো,,বকো,,,কিন্তু প্লিজ,,,কথা বলা বন্ধ করো না প্লিজজজ,,,,থাকতে পারবো না আমি,,,,,প্লিজজজজ

নিশির কোনো পাত্তা নেই,,,নিশি শুনেও না শোনার ভান করে সোজা হেঁটে যাচ্ছে,,আর নিলয় তার পিছু পিছু।।।নিলয় অনর্গল সরি বলে যাচ্ছে,,কিন্তু নিশি বিরক্ত হয়েও ফিরে তাকাচ্ছে না,,যা নিলয় মেনে নিতে পারছে না......…

..

নিশির এভাবে চুপ করে থাকাটা নিলয় নিতে পারছে না,,,,নিলয় এবার সোজা নিশির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,,,

নিশু,এটলিস্ট আমার দিকে তাকাও,,,,আম সরি,,আমি ইনসিকিউর ফিল করছিলাম,,,তাই এমনটা করেছি,,,প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড,,,,

নিশি কিছু বললো না,, হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখ মুছে অন্য দিক ফিরে তাকালো,,,নিলয় এবার নিশির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো,,,করুন চোখে নিশির দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,,

নিশশশু,,,প্লিজ কেঁদো না,,,তুমি আমাকে মারো,,কাটো,, যা ইচ্ছা করো,,,কিন্তু প্লিজ চুপ করে থেকো না প্লিজজজজ।।।আমার ভুল হয়ে গেছে,,আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দাও না,,,,ইউ নো না?হাউ মাচ আই লাভ ইউ.....(কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)

নিশি এবার আর দাঁড়ালোই না,,,নিলয়কে পাশ কাটিয়ে হাঁটতে শুরু করলো,,,একটা রিক্সাও পাচ্ছে না নিশি,,,মেজাজটা চরম খারাপ হচ্ছে ওর,,,সব রিক্সাওয়ালা আজ একসাথে বিয়ে করতে গেছে নাকি,,,,আজিব।।দরকারের সময় কিছুই পাওয়া যায় না।।।নিশি কোনোভাবেই নিলয়কে এই মুহূর্তে ফেস করতে চাচ্ছে না,,,ও জানে যে নিলয়ের ইনোসেন্ট মার্কা চেহারা দেখে নিশি ওর রাগ ধরে রাখতে পারবে না কিন্তু এই মুহূর্তে নিলয়কে ক্ষমা করার কোনো ইচ্ছে নিশির নেই।।।নিশি রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছে,,একরাশ বিরক্তি নিয়ে,,,নিলয় আবারো নিশির পাশে গিয়ে দাঁড়ালো,,,

নিশু,,,এই নিশু??চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিই,,,

নিশি নিলয়ের কথা শুনে চলে যেতে নিলেই,,,,নিলয় একটানে নিশিকে কোলে তোলে নিলো,,,নিশির চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম,,,রাস্তার সবাই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে আর মজা নিচ্ছে।।নিশির খুব অস্বস্তি লাগছে,,কিন্তু নিলয়ের সে দিকে কোনো খেয়াল নেই।।নিলয়ের কর্মকান্ডে নিশি চরম বিরক্ত।। বিরক্তি তার চোখে-মুখে স্পষ্ট।।তার ইচ্ছা করছে নিলয়কে ইচ্ছা মতো গালি দিতে নয়তো কিক দিয়ে একদম মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দিতে,,হুহ।।।কিন্তু তবুও নিশি কিছু বলছে না,,,,চুপচাপ আছে,,,নিশি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে,, সে নিলয়ের সাথে কথা বলবে না,,,,এটাই তার শাস্তি,,অসম্ভব সুন্দর শাস্তি।।।নিলয় ভেবেছিলো নিশিকে হঠাৎ কোলে উঠালে নিশি চেঁচিয়ে উঠবে,,ওকে বকা দিবে,, কিন্তু তার ভাবনায় এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে,,নিশি চুপচাপ বসে রইলো।আর নিলয়ের মুখটা হয়ে গেলো কালো,,,,নিশিকে গাড়িতে বসাতেই,,নিলয়ের চোখ গেলো নিশির গলার দিকে,,,ফরসা চামড়াটা কেমন লালচে হয়ে গেছে।।নিলয়ের এখন নিজের হাতটাই কেটে ফেলতে ইচ্ছা করছে,,কি করে পারলো সে নিশিকে আঘাত করতে??নিজেকে অমানুষ বলে মনে হচ্ছে তার।।।নিলয় নিশির গলায় মলম লাগিয়ে দিচ্ছে,,,নিশি "টু" শব্দটা পর্যন্ত করছে না।।এতে নিলয়ের ভিতরটা যেনো আরো দুমড়ে-মোচড়ে যাচ্ছে,,,এটা নিশির স্বাভাবিক আচরন নয়,,,নিশি স্বাভাবিক থাকলে কখনোই এতো সহজে নিলয়কে গলায় হাত লাগাতে দিতো না,,,, গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো,,নিলয়কে বকাঝকা করতো,,,ছুটাছুটি করতো,,,কিন্তু আজ নিশি এমন কিছুই করছে না,,,নিশি এমনভাবে বসে আছে যেনো আসে-পাশে কেউ নেই।।।নিলয় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিশিকে আড়চোখে একবার দেখে নিয়ে গাড়ি চালাতে মন দিলো।।


নিশি বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,নিলয় মাত্রই ওকে নামিয়ে দিয়ে গেছে,, কিন্তু নিশি ভিতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না,,,কি জানি,,বাসার ভিতরের অবস্থা কি?ফাহিন নিশ্চয় বাবাকে বিয়ের কথা বলেছে,,আর বাবা এতোক্ষণে রেগে অগ্নিমূর্তি হয়ে আছেন।।নিশির গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার,,,হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে,,,মনে মনে দোয়া-দুরুদ পড়তে পড়তে,,কাঁপ কাঁপা পায়ে এগিয়ে গেলো নিশি ।।তারিকুল রহমান ক্রমাগত পায়চারী করছেন।।তার ভ্রু উত্তেজনায় কুঁচকে আছে,, নিশিকে দরজায় দাড়িয়ে থাকতে দেখেই থমকে দাঁড়ালেন তিনি।।বাবাকে এভাবে তাকাতে দেখেই নিশির হাত-পায়ে কাঁপন ধরে গেছে ,,নিশ্চয় বাবা এবার নিশির গালে কষে একটা থাপ্পর বসিয়ে,,,মুখটাকে ৩৩ ডিগ্রী এংগেলে বাকিয়ে দিবেন,,,,নিশি ক্রমাগত আল্লাহ আল্লাহ করছে,,,কিন্তু নিশির বাবা নিশিকে চরম অবাক করে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলেন,,,নিশির মাথা ভো ভো করছে কি হচ্ছে এসব???অবাক চোখে পাশে তাকাতেই দেখে ফাহিন বসে আছে তার মুখে রহস্যময়ী হাসি।।নিশি এসবের কিছুই বুঝতে পারছে না,,কাহিনী কি??ফাহিন বাবাকে কি এমন বলেছে, যার জন্য বাবা ওকে থাপ্পরের পরিবর্তে জড়িয়ে ধরলো,,,,দুই মিনিট পর বাবা নিশিকে ছেড়ে দিয়ে,, মাথায় হাত রেখে খুশি খুশি গলায় বললেন,,,"আম সো হ্যাপি ফর ইউ।।" নিশির কাছে মনে হচ্ছে সে শার্লকহোমসের কোনো সিরিজ পড়ছে,,,চারদিকে শুধু রহস্য আর রহস্য।।।বাবার কথায় রহস্য,,,,ফাহিনের হাসিতে রহস্য,,সব জায়গায় রহস্য,,,নিশি যে টেনশনে এখনো হ্যাং মারে নি কেনো সেটাও একটা রহস্য।।।বাবার কথায় নিশির ভাবনার সুতো কাটলো,,,,

নিশু মা,, কি ভাবছিস এতো??

কিছু না বাবা,,,ব,, বললে না তো,,,এতো খুশি কেন আজ??

ও তোকে তো বলিই নি,,,ফাহিন,,,এর পরের সপ্তাহেই কানাডা চলে যাবে,,,তাই এই সপ্তাহেই বিয়েটা শেষ করতে চাচ্ছে,,,তোকে সাথে নিয়ে যাবে বলে কথা,,,

বলেই প্রশান্তির হাসি দিলেন,,,কিন্তু বাবার কথায় নিশি মোটেও প্রশান্তি পেলো না বরং চমকে উঠলো।।। কিহ্,,, ফাহিন বিয়ে করবে??কিন্তু কেনো??নিশি মনে হচ্ছে এবার সত্যি সত্যি সেন্স হারাবে,,,ভেবেছিলো একটা প্রবলেম সল্ব হয়েছে,,কিন্তু এখন দেখছে ব্যাপারটা আরো উল্টে-পাল্টে বিশ্রী রূপ ধারন করেছে।।।

আংকেল?? আই থিংক নিশুর রেস্ট দরকার,,ও খুব টায়ার্ড,,,তাই না নিশু??(বাঁকা হাসি দিয়ে)

নিশি রাগান্বিত চোখে তাকালো,,যেনো চোখ দিয়েই ঝলসে ফেলবে ফাহিনকে,,,

হ্যা,,যা মা যা,,,কিন্তু তোর গলায় এমন লাল হয়ে আছে কেন?? (চিন্তিত হয়ে)

উড়নাটা রিকশায় আটকে গিয়েছিলো বাবা।।(ডাহা মিথ্যে কথা)

কি সাংঘাতিক কথা,,,,বড়সড় এক্সিডেন্ট হতে হতে বেঁচে গেছিস।।তারপর কি হলো মা?

বাবা?এখন রামায়ন পাঠ শুনানোর টাইম আমার নেই,,আমি ঘুমাবো।।(বিরক্তি নিয়ে)

আচ্ছা তুই যা,,,পরে শুনবো(মুখ কালো করে)

নিশি ফাহিনকে পাশ কাটিয়ে রুমের দিকে যেতে নিলেই,, তারিকুল রহমানের অলক্ষে নিশির হাত চেপে ধরলো ফাহিন,,,বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,,

কেমন দিলাম বেবি??আরো হবে জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ,,(চোখ টিপ দিয়ে হাতটা ছেড়ে দিলো)

নিশির চরম রাগ লাগছে নিজের উপর।।কি দরকার ছিলো নিলয়কে আটকানোর??এই ফাহিনটাকে মেরে ফেলতো তাতেই বেশ হতো,,,এটলিস্ট এতো ঝামেলা তো পোহাতে হতো না।।।।নিশিতো ভেবেছিলো ফাহিন ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না,,,কিন্তু এ তো রীতিমতো ইলিশমাছ খাচ্ছে।।।

#চলবে

Comments

Popular posts from this blog

মুখোশের আড়ালে - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-১৯)

ধোঁয়াশা - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২১)

কলঙ্কের ফুল - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২৯)