কলঙ্কের ফুল - সাজি আফরোজ (পর্ব ১১)

valobashar golpo,bangla valobashar golpo,valobasar golpo,valobashar golpo bangla,bangla sad valobashar golpo,valobashar kobita valobashar golpo,valobashar kotha,valobashar golpo audio,valobashar golpo voice,valobashar golpo natok,bhalobashar golpo,koster golpo,udash valobasha,sad valobashar golpo,valobashar golpo song,valobashar golpo 2018,valobashar golpo kotha,abegi valobashar golpo,valobashar golpo video

মিলির দিকে গম্ভীর মুখে তাকিয়ে সানিয়া জবাব দেয়-
আমি আমার আমজাদ আঙ্কেল এর বাসায় এসেছি। এতে কারো কোনো সমস্যা আছে বলে আমি করিনা।
-এই মেয়ে? আমি কি বলেছি কোনো সমস্যা আছে!
-আঙ্কেল কোথায়?
-ডাইনিং রুমে।
.
আর না দাঁড়িয়ে লাগেজ হাতে নিয়ে সানিয়া এগিয়ে যায় ডাইনিং রুমের দিকে।

এতো সকালে সানিয়াকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে যায় আদি।
বাকি সকলেও অবাক হয়ে যায়।
সবার মনেই একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সানিয়া লাগেজ হাতে চৌধুরী বাড়িতে কেনো?
.
সবার মুখের ভঙ্গি দেখে সানিয়া ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে ডায়াল করে তার বাবার নাম্বারে।
-হ্যালো আব্বু?
-হুম মা বল।
-এখানে সবাই আমাকে দেখে হা হয়ে গিয়েছে।
-স্বাভাবিক। না জানিয়ে গিয়েছিস বলে কথা। এক কাজ কর। ফোনটা আমজাদ কে দে।
-আচ্ছা দিচ্ছি।
.
আমজাদ চৌধুরীর পাশে গিয়ে সানিয়া তার দিকে মোবাইল এগিয়ে দিয়ে বলে-
আব্বু কথা বলবে আপনার সাথে।
.
-হ্যালো এরশাদ?
-কেমন আছিস আমজাদ?
-ভালো তুই?
-আমি ভালো আছি। কিন্তু হঠাৎ সানিয়ার খালার শরীরটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই আমাদের কক্সবাজারের বাইরে যেতে হচ্ছে।
-ওহ!
-সানিয়াকে ওর ফুফুর বাসায় যেতে বলেছিলাম কিন্তু সে তোর বাসায় থাকতে চেয়েছে। কিছুদিন যদি তোর বাসায় থাকে সমস্যা হবে কি?
-কি যে বলিস না তুই! এতোবড় বাড়ি আমার, কিসের সমস্যা?
-টেনশন মুক্ত করলি তুই আমায়। তাহলে রাখি এখন।
.
মোবাইল সানিয়ার হাতে দিয়ে আমজাদ চৌধুরী তার উদ্দেশ্যে বলেন-
বসো সানিয়া, নাস্তা করো আমাদের সাথে। আর যতদিন তোমার মা বাবা না আসে ততদিন তুমি এখানে থেকো।
.
.
.
নাস্তা সেরে মেহেরীকার জন্য ট্রে তে খাবার নিয়ে মিলি এগুতে থাকে তার রুমের দিকে।
মাঝপথে আদি এসে বলে-
ভাবী?
-হুম?
-আমি নিয়ে যাই ট্রে?
-বাহ! আমার দেবর দেখি বউ কে ইমপ্রেস করার জন্য নিজ হাতে খাবারও নিতে চাইছে।
-কি যে বলোনা ভাবী তুমি! তোমার কষ্ট হবে বলে বলছিলাম।
-আচ্ছা তাই!
-হুম তাই।
-ঠিক আছে নাও। তবে হ্যাঁ আমার কিন্তু মোটেও কষ্ট হতোনা।
.
কথাটি বলে আদির হাতে ট্রে দিয়ে মুচকি হেসে মিলি চলে যায়।
.
আদি ট্রে হাতে নিয়ে এগুতে থাকে নিজের রুমের দিকে।
দিবার কাছে শুনেছে সানিয়া এখন মেহেরীকার রুমে। এই সুযোগটা তার কাজে লাগাতে হবে।
.
আদি নিজের রুমে ঢুকতেই দেখে মেহেরীকা আর সানিয়া বিছানার উপরে বসে হেসে হেসে কথা বলছে। নিশ্চয় সানিয়া কোনো কুবুদ্ধি করেছে। নাহলে এতো সহজে মেহেরীকার সাথে সে ফ্রি হতোনা।
.
-আরে তুমি?
.
মেহেরীকার ডাকে তার দিকে তাকিয়ে আদি মৃদু হেসে বলে-
তোমার জন্য সকালের খাবার এনেছি জান পাখি।
.
জান পাখি! আদি তাকে জান পাখি কেনো ডাকলো? সানিয়ার দিকে চোখ পড়তেই বুঝতে পারলো মেহেরীকা জান পাখি ডাকার কারণ।
.
এদিকে আদির মুখে মেহেরীকা কে জান পাখি ডাকা শুনে সানিয়ার ভেতরের আগুন আরো তীব্রভাবে জ্বলতে শুরু করে। কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে আদির উদ্দেশ্যে বলে-
রেখে যাও খাবার। আমি আর মেহেরীকা গল্প করছি এখন।
.
আদি তাদের দিকে এগিয়ে এসে মেহেরীকার পাশে বসে, বিছানার উপর ট্রে রেখে বলে-
গল্প পরে। আগে আমার পাখিটাকে খাইয়ে দেয়। বাসার চিন্তায় কাল রাতেও কিছু খায়নি সে।
.
খাইয়ে দিবে মানে! একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছেনা! অভিনয় এর নাম করে এখন এই আদিয়াত এর বাচ্চা আদিয়াত তাকে নিজ হাতে খাইয়েও দিবে! নাহ একে মাথায় চড়তে দেওয়া ঠিক হবেনা।
.
মেহেরীকা তার মুখে জোর করে হাসি এনে বলে-
আমি নিজে খেতে পারবো আদিয়াত। তোমার কষ্ট করতে হবেনা।
-তুমি খাবার নষ্ট করবা আমি জানি।
-করবোনা।
-আমার সোনা পাখিটা, আর দুষ্টুমি না করে খেয়ে নাও প্লিজ।
.
এপর্যায়ে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে সানিয়া।
অন্যদিকে তাকিয়ে বলে-
আমি তাহলে আসি এখন।
.
তার মুখের দিকে তাকিয়ে আদি বুঝতে পারে সানিয়ার মনের অবস্থা। মুচকি হেসে বলে সে-
হুম আসো। মেহের কে খাইয়ে ওর সাথে একটু সময়ও কাটাতে চাই আমি।
.
আর কোনো কথা না বলে তড়িহড়ি করে বের হয়ে যায় সানিয়া, আদির রুম থেকে।
.
সানিয়া বের হতেই দাঁতে দাঁত চেপে মেহেরীকা আদির দিকে তাকিয়ে বললো-
জান পাখি কে?
-কেনো তুমি!
-আমাকে এসব ফালতু মার্কা নামে একদম ডাকবা না।
-কি ডাকবো? বেবি, বাবু?
-ধ্যাত, এসব কিচ্ছু ডাকতে হবেনা। মেহের ঠিক আছে।
-আমার শখ হয়নি নকল বউ কে এতো সোহাগী নামে ডাকার।
আমিতো শুধু সানিয়াকে দেখাতেই.....
-কেনো মেয়েটাকে কষ্ট দিচ্ছো? তার বাসায় কেউ নেই বলেই এসেছে সে এখানে।
-ওর কি রিলেটিভ এর অভাব পড়েছে! এখানেই কেনো আসতে হলো?
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে মেহেরীকা বললো-
একটা কথা বলি?
-হু।
-আগে যা করেছে তার জন্য যদি সত্যি অনুতপ্ত হয় সানিয়া, তবে কি তুমি তাকে মেনে নিবে? বড় ঘরের মেয়ে, শিক্ষিত, সুন্দরী। শুধু একটু বিগড়ে যাওয়া মেয়ে। যদি সে তোমার জন্য নিজেকে বদলাতে পারে তাহলে তুমি কেনো তাকে একটা সুযোগ দিতে পারোনা?
-আমার মনে হয়না ওর স্বভাব বদলাবে।
-ভালোবাসা মানুষকে পরিবর্তন করতে পারে।
-তাই!
-হুম তাই। ভেবে দেখবে আমার কথা।
-হুম।
.
ব্যাগ গুছিয়ে দিবা তৈরি হতে থাকে। কলেজের নাম করে আজ পিকুর সাথে দেখা করতে হবে তার।
বেশ কয়েকমাস ধরে পিকু অন্যরকম আচরণ করে দিবার সাথে। সারাক্ষণ কথা বলা ফোনে, কয়েকদিন পর পর দেখা করা। এসব যেনো একটা রুটিন হয়ে যাচ্ছে। এইরকম চলতে থাকলে কখন যে বাসায় ধরা খাবে সে, এই ভয়েই থাকে দিবা। কিন্তু পিকুকে কিছু বুঝানো যায়না। দিন যত যাচ্ছে অবুঝ হয়ে পড়ছে সে। তার কোনো আবদার না ফেলেও পারেনা দিবা।
.
পিকুর কথা ভাবতে ভাবতেই কল আসে দিবার ফোনে।
-হ্যালো পিকু?
-বের হচ্ছো?
-হুম হচ্ছি। প্রথম একটা ক্লাস করে নেয়। তারপর দেখা করবো তোমার সাথে।
-কটার দিকে আসবো আমি কলেজের সামনে?
-১০.০০ টা।
-আচ্ছা।
.
.
.
আরেকটা দিন অতিবাহিত হতে যাচ্ছে কিন্তু মেহেরীকার কোনো খবর নেই। লোক ভয়ে, মায়ের ভয়ে এভাবে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোনো মানে হয়না।
মুনিয়া ড্রয়ার খুলে বোনের মোবাইল ফোনটি নিয়ে অন করে।
একে একে কল করতে থাকে মোবাইলে সেইভ করা সব নাম্বারে। কিন্তু ফোনের ওপাশের কেউ তার বোনের খবর দিতে পারেনি। তাহলে কি তার বোন হতাশায় পড়ে ভুল কিছু করে ফেলেছে?
নাহ, কখনো না। মেহেরীকা সাহসী মেয়ে। লড়তে জানে সে। এতো সহজে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়ার মেয়ে মেহেরীকা নয়।
কিন্তু বোনের একটা খবর না পাওয়া পর্যন্ত মনতো মানছেনা। এই মূহুর্তে কার কাছে সাহায্য চাইবে সে?
.
ভাবতে ভাবতেই মেহেরীকার মোবাইল এর ইনবক্স এ ঢুকে পড়ে মুনিয়া। যেখানে রয়েছে রাজীবের সাথে তার অজস্র মেসেজ। একে একে অনেক গুলোই মেসেজ পড়ে মুনিয়া। ভালোবাসার কোনো কমতি ছিলোনা দুজনের মাঝে তাহলে কেনো রাজীব তার বোনের সাথে এমনটা করলো?
হুম রাজীব... মেহেরীকা আজ বাড়ি ছাড়া শুধুমাত্র রাজীবের জন্য। রাজীব কে জবাব দিতেই হবে কেমন তার ভালোবাসা ছিলো? আদৌ ভালোবাসা ছিলো নাকি মোহ?
.
.
.
রুম থেকে বের হয়ে হাটতে থাকে মেহেরীকা। রান্নাঘরের দিকে চোখ যেতেই সেদিকে এগিয়ে যায় সে। রান্নাঘরে প্রবেশ করতেই মিলির দেখা পায় মেহেরীকা।
-ভাবী আসবো?
-আরে মেহেরীকা তুমি! এসো ভাই। এটা আমার রুম নয় যে অনুমতি নিতে হবে তোমার।
.
মৃদু হেসে মেহেরীকা তার পাশে গিয়ে বলে-
হুম তা নয়। তবে ভাবী আদিয়াত এর রুম ছাড়া কারো রুম-ই দেখলাম না আমি। এক রুমে থাকতে আর ভালো লাগছেনা। তাই হাটছিলাম। আর হাটতে হাটতে রান্নাঘর পেয়েছি।
.
তরকারি কুটা বাদ দিয়ে মেহেরীকার দিকে তাকিয়ে মিলি বলে-
চলো তোমাকে ঘর দেখায়।
-কেউ কিছু মনে করলে....
-আরে কে কিছু মনে করবে!
.
মেহেরীকাকে সারা বাড়ি ঘুরিয়ে দেখায় মিলি।
মুগ্ধ দৃষ্টিতে মেহেরীকা পুরো চৌধুরী বাড়ি দেখে নেয়। এমন একটা বাড়িতে হাটাচলা করারও সুযোগ পাবে কখনো সে ভাবেনি।
.
মেহেরীকাকে নিয়ে মিলি নিজের রুমে এসে বিছানার উপরে বসতে বসতে বলে-
বসো তুমিও।
.
মিলির পাশে মেহেরীকা বসে বললো-
ভাইয়া কোথায়?
-সেতো কবেই অফিসে চলে গিয়েছে।
-আমার তার সাথে দেখা হয়নি।
-কি করে হবে! সেতো এসেছেই রাত করে। তখন সবার খাওয়া হয়ে গিয়েছিলো। তোমাকে আর ডাকিনি।
-ওহ। প্রতিদিন এমন করে?
-হুম, একা সব সামলাতে হয়তো তাই কাজের চাপ বেশি।
-হুম।
-আমরাও প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম।
-কি বলো!
-হুম, তবে পালিয়ে নয়।
-আমি শুনতে চাই ভাবী তোমাদের কাহিনী।
-আরেকদিন...
-ইন্না, এখুনি।
-আচ্ছা বলছি। আমাদের ফেবুতে পরিচয় হয়। চ্যাট, ফোনে কথা বলা, দেখা করা ইত্যাদির মাধ্যমে আমি তার প্রেমে পড়ে প্রপোজ করি।
-ওয়াও! তুমি করেছো প্রপোজ?
-হুম। আরিফ কিছুদিন সময় নিয়েছিলো ভাবতে।
.
কথাটি শুনে উচ্চশব্দে হেসে উঠে মেহেরীকা।
তার সাথে মিলিও হেসে উঠে।
হাসতে হাসতেই মিলি বলে-
ভেবে চিন্তে আরিফ আমার প্রপোজে রাজি হয়। তারপর প্রেম করি অনেকদিন আমরা।
কিন্তু একসময় আমার বাসায় বিয়ের জন্য চাপ দেয় আমাকে।
আর আমার বলদটা তার বাসায় বলতে ভয় পায় আমাদের সম্পর্কের কথা।
-কি বলো! তারপর কিভাবে কি হলো?
-তারপর আর কি! যখন বাসায় বলছিলো না আমি রেগে গিয়ে অনেকদিন কথা বন্ধ রেখেছিলাম। তখন আরিফ বুঝতে পারে সেও আমাকে অনেক ভালোবাসে। প্রথমে তার মা মানে আমার শ্বাশুড়ি কে জানায় আরিফ আমার কথা। তার সাহায্যে বাবাকে জানায় আরিফ। উনি প্রথমে মেনে না নিলেও আরিফের মন রাখার জন্য রাজি হন।
-রাজি কেনো হতে চাননি প্রথমে?
-তার মতে আরিফ আরো ভালো কোনো মেয়ে জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পেতে পারতো।
-কিন্তু ভাবী তোমার চেয়ে ভালো কাউকে পেতোনা।
-পেতো হয়তো।
-এমন কেনো বলছো ভাবী?
-আরিফ আগের মতো নেই মেহেরীকা। ভীতু স্বভাবের হলেও আমাকে অনেক ভালোবাসতো, ভালো রাখার চেষ্টা করতো। কিন্তু এখন সে শুধু কাজ, কাজ আর কাজ নিয়ে থাকে। আমি বুঝি একা হাত কিন্তু মনতো মানেনা। মাঝেমাঝে মনে হয় আরিফও কি ভাবে, সে আমার চেয়ে ভালো কোনো মেয়ে তার জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পেতো?
.
.
.
পিকু আর দিবা দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি রেস্টুরেন্ট এর সামনে।
ক্লাস শেষে দিবা, পিকুর বাইকে চড়ে তার সাথে এসেছে এখানে। কিন্তু এর আগে কখনো সে এই রেস্টুরেন্ট এ আসেনি বা নামও শুনেনি। অনেকটায় নির্জন জায়গায় এটি।
-চলো দিব।
-পিকু?
-হুম বলো?
-তুমিতো আমায় বলোনি এতো নির্জন জায়গায় নিয়ে আসবে।
-আমি নিজেও ঠিক করিনি এখানে আসবো। তোমার কথা ভেবেই আসলাম।
-বুঝলাম না।
-দিবা এটা ডার্ক রেস্টুরেন্ট।
-মানে?
-মানে এটার ভেতরে অন্ধকার। আমরা পাশাপাশি বসতে পারবো, একটু ক্লোজ হতে পারবো।
-কি বলছো তুমি এসব! আমি এমন রেস্টুরেন্ট এ যাবোনা।
-দিবা তুমি অন্য কোথাও যেতে ভয় পাও। পার্ক এ গেলে কেউ দেখে ফেলবে, রেস্টুরেন্ট এ বসলে কেউ দেখে ফেলবে, সবসময় দুরুত্ব বজায় রাখো। আমার সাথে দেখা করার সময় মাথায় এতো বড় ঘুমটা টেনে মুখ বন্ধ করে রাখো। আমি তোমার বফ, আমার কি ইচ্ছা হয়না তোমার সাথে একটু আলাদা সময় কাটায় কোনো ভয় ছাড়া? পাশাপাশি বসে দুজনে দুজনের হাত ধরে একটু কথা বলি? আমি তোমাকে ভালোবাসি বলেই ইচ্ছে হয়।
-তুমি কি বলতে চাইছো আমি তোমায় ভালোবাসি না?
-হয়তো না।
-পিকু!
-নাহলে এখন এতো সুন্দর ব্যবস্থা পাওয়ার পরেও কেনো তুমি এমন করছো! কেউ দেখবেনা আমাদের এখানে, তাহলে কি সমস্যা?
.
চোখ বন্ধ করে কয়েকটা লম্বা দম ফেলে দিবা বললো-
চলো ভেতরে।
.
.
.
মিলির রুম থেকে বের হয়ে মেহেরীকা মনে মনে মিলির বলা কথাগুলো আওড়াতে থাকে।
ভালোবেসে বিয়ে করেও তাদের মাঝে এতো দুরুত্ব শুধুমাত্র কাজের চাপের জন্য? মিলির মতে তাই। কিন্তু এর কি কোনো সমাধান নেই? এভাবে চলতে থাকলে আরিফ আর মিলির সম্পর্কটা ঠুনকো হয়ে যাবে।
মিলির কথা ভাবতে ভাবতে পরক্ষণেই মনে পড়ে আদিয়াত এর কথা মেহেরীকার।
হুম আদিয়ার যদি তার ভাই আরিফের সাথে ব্যবসার কাজে হাত লাগায় তাহলে নিশ্চয় আরিফের উপর থেকে দায়িত্ব অনেকটায় কমবে। আর আদিয়াত-ই তার ভাইকে, মিলি ভাবীর ব্যাপারে বুঝাতে পারবে।
হুম তাই করতে হবে। আদিয়াতকে আগে ঠিক করতে হবে, তারপর তার ভাই ভাবীর সম্পর্ক।
.
নিজের মনে কথাগুলো বলে মেহেরীকা এগিয়ে যায় আদির রুমের দিকে।
.
.
.
-এই যে নবাবের বেটি? কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
আজতো তোর ক্লাস নেই।
.
রেশমা আহম্মেদ এর ডাকে দাঁড়িয়ে পড়ে মুনিয়া।
ঘরের বাইরে যাচ্ছিলো সে। উদ্দেশ্য তার রাজীবের সাথে দেখা করা। কিন্তু তার মা এটা জানতে পারলে কিছুতেই বেরুতে দিবেনা তাকে। তাই আপাতত মিথ্যে বলেই বেরুতে হবে।
.
-বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছি।
-এক বোন একটা কাণ্ড ঘটায়ছে চারদিন হয়নাই। আরেক বোন ঢেংঢেং করে এখন বাইরে যাচ্ছে। বলি লজ্জা, সরম কিছু নাই নাকি? আর কতো কাণ্ড ঘটাবি তোরা?
.
এপর্যায়ে ফুঁসে উঠে মুনিয়া বলে-
তোমাকে সম্মান করি বলেই কিছু বলিনা। কিন্তু আজ শেষ বারের মতো সাবধান করছি তোমায়, আমার আপুকে নিয়ে আজেবাজে কিছু বলবেনা তুমি। নাহলে খুব খারাপ হবে, খুব।
.
কথাটি বলেই হনহন করে বেরিয়ে পড়ে মুনিয়া। আজ রাজীবের সাথে তার দেখা করতেই হবে। অনেক কিছুর জবাব চায় তার রাজীবের কাছ থেকে।
.
(চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

মুখোশের আড়ালে - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-১৯)

ধোঁয়াশা - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২১)

কলঙ্কের ফুল - সাজি আফরোজ (সকল পর্ব ১-২৯)